বাড়ি থেকে জ্বিন-শয়তান তাড়ানোর নিয়ম

বাড়ি থেকে জ্বিন-শয়তান তাড়ানোর নিয়ম

বাসা/বাড়ি বা কোনো স্থান থেকে জ্বিন-শয়তান তাড়াতে এবং তাদের ক্ষয়-ক্ষতি বা প্রভাব (আসর) দূর করতে নিম্নোক্ত নির্দেশনাগুলো ফলো করতে পারেন।

 

পরিপূর্ণ ফলাফল পাওয়ার জন্য করনীয়/বর্জনীয়ঃ

 

(ক) তাবিজ-কবজসহ সকল প্রকার বাতিল (কুফরী, শিরকী, বিদআতী ও সন্দেহযুক্ত) চিকিৎসাপদ্ধতির আশ্রয় গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা। তান্ত্রিক, কবিরাজ, ওঝা, জ্বিন-হুজুর বা এজাতীয় কারো কাছে না যাওয়া, তাদের কোনো বক্তব্য বিশ্বাস বা সত্যায়ন না করা। তাদের দেয়া তাবিজ, কবজ, কোনো কিছু মিশ্রিত পানি, তেল, সুতা, কাপড় ইত্যাদি কোনো কিছু ব্যবহার বা সংরক্ষণ না করা। ইতিপূর্বে গ্রহণকৃত বাতিল চিকিৎসার সকল উপকরণ নষ্ট করে ফেলা (যথাযথ নিয়মে) এবং উত্তমরূপে তওবা করা। রাশিফল, হস্তরেখা বিশ্লেষণ, বিভিন্ন প্রকার কুসংস্কার ইত্যাদি বিশ্বাস না করা।

(খ) অন্তত ফরয-ওয়াজিব পর্যায়ের কোনো ইবাদতে ত্রুটি বা ঘাটতি না থাকা (সলাত আদায় করা, পর্দা করা ফরয)। নাজায়েজ ও হারাম কাজ থেকে দূরে অবস্থান করা (বিবাহবহির্ভূত প্রেম-প্রীতি হারাম) । উপার্জন সম্পূর্ণ হালাল ও সন্দেহমুক্ত হওয়া। আল্লাহর উপরে পূর্ণরূপে তাওয়াক্কুল করা। ইখলাছে ঘাটতি না থাকা।

(গ) বাসগৃহে কোনো ছবি, মুর্তি, পুতুল, কার্টুন, বাদ্যযন্ত্র, টেলিভিশন ইত্যাদি কোনো কিছু না রাখা। প্রয়োজনীয় ছবি যেমনঃ পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা টাকায় থাকা ছবি ইত্যাদি ভালভাবে ঢেকে রাখা। বেপর্দা ও ইসলামী শরীয়াহ বিরোধী যে কোনো অনুষ্ঠান, নাটক-সিনেমা, পর্ণোগ্রাফী, গান-বাদ্য, ভিডিও গেমস, কার্টুন ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা (বাচ্চদেরকে স্মার্টফোন/ডিভাইস থেকে দুরে রাখতে চেষ্টা করা)। ইত্যাদি।

 

মূল কার্যক্রমঃ

বাসা/বাড়ি বা কোনো স্থান থেকে জ্বিন-শয়তান তাড়াতে এবং তাদের ক্ষয়-ক্ষতি বা প্রভাব (আসর) দূর করতে নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করবেন। এগুলির মধ্য থেকে কোনো কাজ নিজে করতে না পারলে অন্য কারো সাহায্যও নিতে পারেন।

 

১ম ধাপঃ

(ক) কয়েকজন মিলে বাড়ির চতুর্দিকে ও ঘরের ভিতরে ঘুরে ঘুরে জোরে জোরে এই ঘোষনা দিবেন “আল্লাহর শপথ করে বলছি, তোমরা আমাদের বসবাসের স্থান থেকে চলে যাও, আল্লাহর অনুগত হয়ে চলে যাও, আমাদের কাউকে আর কষ্ট দিও না” (কয়েকবার)।

(খ) একটা পাত্রে কিছু পানি পড়ে নিবেন (নিয়ম পরে দেয়া আছে), আগে থেকেও পড়ে রাখতে পারেন। সেই পড়া পানি বাড়ির সকল কক্ষে এবং আঙিনায় ছিটিয়ে দিবেন।

(গ) ঘোষণা দেয়া এবং পানি ছিটানো শেষ হলে উচ্চস্বরে আযান দিবেন (একবার)।

‌একাজগুলি পরপর ৩/৫/৭ দিন (সমস্যার তীব্রতা অনুযায়ী) করবেন, প্রতিদিন বার, সুবিধামতো সময়ে।

 

২য় ধাপঃ

(১ম ধাপ শেষ হওয়ার পর) উক্ত স্থানে (বাসা/বাড়ি) পরপর ৩/৫/৭ দিন (সমস্যার তীব্রতা অনুযায়ী) সূরা বাকারাহ উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করবেন (দিনে ১ বার, সুবিধামতো সময়ে)। মাঝেমধ্যে এটা করবেন, অন্তত সপ্তাহে বা মাসে ১ বার। তেলাওয়াত করতে একান্ত অপারগ হলে বিকল্প হিসাবে উচ্চ ভলিউম দিয়ে সূরা বাকারার অডিও তেলাওয়াত বাজানো যাবে। এসময়ে বাসা/বাড়ির সকল সদস্য (অন্তত যেকোনো একজন) উক্ত অডিও তেলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শুনবে।

 

নিয়মিত করণীয়ঃ

(ক) পানাহারের শুরুতে, ঘরে প্রবেশ/বাহির হওয়া ও দরজা-জানালা খোলা/বন্ধ করার সময় “বিসমিল্লাহ” বলা।

(খ) টয়লেটে প্রবেশের পূর্বের দোয়া এবং ঘুমানোর পূর্বের দোয়া গুরুত্ব সহকারে পড়া।

(গ) দৈনন্দিন নিরাপত্তার আমলগুলো (ইনডেক্স থেকে ২ নং PDF) গুরুত্ব সহকারে করা (যে যতটুকু পারে)।

(ঘ) ছোটো বাচ্চাদেরকে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে থেকে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর পর্যন্ত ঘরের ভিতরে রাখা।

 

পানি, তেল ইত্যাদি পড়ার নিয়মঃ

(ক) প্রথমে অযু নিয়ে কয়েকবার ইস্তিগফার পড়ুন। তারপর যে সমস্ত জিনিস পড়তে হবে (পানি, তেল ইত্যাদি) সেগুলো গুছিয়ে সামনে নিয়ে বসুন। নিয়ত ঠিক করে নিন (কি উদ্দেশ্যে এগুলো পড়ছেন)।

(খ) নিম্নোক্ত দরুদ, সূরা ও আয়াতগুলি ৩/৫/৭ বার করে (যেটা সম্ভব হয়) পড়বেন (আওয়াজ করে, আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ সহ)। প্রতিটি সূরা/আয়াত পড়া শেষে পানি, তেল ইত্যাদিতে ফু দিবেন।

০১) দরুদে ইব্রাহীম (নামাজের দরুদ),

০২) সূরা ফাতিহা,

০৩) আয়াতুল কুরসী,

০৪) সূরা বাকারার শেষ ২ আয়াত (ঐচ্ছিক),

০৫) সূরা কাফিরুন (ঐচ্ছিক),

০৬) সূরা ইখলাছ,

০৭) সূরা ফালাক,

০৮) সূরা নাস।

 

তাবিজ বা যাদুর জিনিসপত্র নষ্ট করার নিয়মঃ

এগুলো নষ্ট করার নিয়তে একটা পাত্রে কিছু পানি পড়ে নিবেন। তারপর উল্লিখিত জিনিসপত্র ঐ পানিতে (ডুবিয়ে দিয়ে) কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখবেন। তাবিজ খুলে/ভেঙ্গে ভিতরের কাগজ/জিনিসপত্র বের করে ছিঁড়ে/কেটে টুকরো টুকরো করে নিবেন। প্রয়োজনে হাতুড়ি, ছুরি, কাঁচি ইত্যাদি ব্যবহার করবেন। এগুলি করার সময় মুখে হালকা আওয়াজে তিন কুল পাঠ করতে থাকবেন (বারবার)। কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পর সেগুলো মাটিতে পুতে দিতে পারেন, পুড়িয়ে দিতে পারেন, নদী-খাল ইত্যাদিতে অথবা নির্জন কোনো জাগায় ফেলে দিতে পারেন।

 

বিঃ দ্রঃ রুকইয়াহ্ (ঝাড়-ফুঁক) করতে, পানি, তেল ইত্যাদি পড়তে বিশেষ কোনো আমল বা সাধনা, বিশেষ কোনো ব্যক্তি বা পীরের এজাজত (অনুমতি) ইত্যাদি কোনো কিছু প্রয়োজন হয় না। নারী-পুরুষ উভয়ই এটা করতে পারবেন।।

( খালিদ বিন সিদ্দীক )

 

রুকইয়াহ এন্ড হিজামা সার্ভিস খুলনা

সেন্টারের ঠিকানাঃ 

খানজাহান আলী রোড, খুলনা আলিয়া মাদ্রাসার বিপরীতে,

খুলনা সদর, খুলনা।

যোগাযোগ ও এপয়েন্টমেন্টঃ

+8801757266226  

Share